গ্লোবাল অটোমোবাইল শিল্পে যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রভাব দ্রুত বাড়ছে, তখন জার্মান গাড়ি নির্মাতা বিএমডব্লিউ চীনা প্রযুক্তি সংস্থা ডিপসিকের সঙ্গে এক যুগান্তকারী অংশীদারত্ব ঘোষণা করেছে। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ চীনে বাজারজাত করা বিএমডব্লিউ-এর নতুন মডেলগুলোতে যুক্ত হবে ডিপসিকের তৈরি এআই প্রযুক্তি-যা শুধু প্রযুক্তিগত নয়, ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।
বুধবার সাংহাই অটোশোতে বিএমডব্লিউ-এর সিইও অলিভার জিপসে এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, চীনের বাজারে আরও প্রাসঙ্গিক থাকতে তাদের ‘এআই পার্টনারশিপ’ জোরদার করা হচ্ছে। যদিও এখনো নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, এ এআই প্রযুক্তি স্মার্ট ড্রাইভিং, চালক সহায়ক প্রযুক্তি না কি সুরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হবে, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি বিএমডব্লিউয়ের ভবিষ্যৎ মডেলগুলোকে আরও স্মার্ট ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।
চীনের এআই কোম্পানি ডিপসিক সম্প্রতি তাদের আর১ মডেল দিয়ে বিশ্ববাজারে আলোড়ন তোলে। উন্নত চিপ সরবরাহে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও, তারা প্রমাণ করেছে, সৃষ্টিশীল সফটওয়্যার এবং ডেটা ট্রেইনিংয়ের মাধ্যমে চীন এখনো এআই রেসে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চীনের অটোমোবাইল খাতে প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা আরও জোরদার হবে এবং পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠবে।
অন্যদিকে, চীনে বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য এআই ও ডেটা সুরক্ষা আইনের কড়াকড়ি রয়েছে। ফলে, বিএমডব্লিউকেও স্থানীয় পার্টনারের সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে, যা চীনা সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ধারা অনুযায়ী, অ্যাপল থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট পর্যন্ত অনেক পশ্চিমা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চীনা বাজারে এআই ফিচার চালু করছে।
বিএমডব্লিউ-ডিপসিক জোট শুধু একটি ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নয়, এটি প্রযুক্তি ও ভূরাজনীতির নতুন যুগের প্রতীক। এটি প্রমাণ করে, এআই এখন আর শুধু উদ্ভাবনের বিষয় নয়; এটি হয়ে উঠছে বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারত্বের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
