রপ্তানিমুখী খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালোটাকা) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া,
নতুন শিল্পে জ্বালানির নিশ্চয়তা দেওয়াসহ টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাতে সমস্যা নিরসনে ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন দি ইনস্টিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস (আইটিইটি)
বাংলাদেশের নেতারা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রাক-বাজেট আলোচনা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় আইটিইটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. এনায়েত হোসেন বলেন, বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের ওপর। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতি, অনিয়মিতভাবে গ্যাসের সরবরাহ, অন্যদিকে ২০২৩ সালে হঠাৎ করে গ্যাসের মূল্য ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। ফলে টেক্সটাইল শিল্পকারখানাগুলোকে চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে যদি আমরা ম্যান মেইড ফাইবার ও ফেব্রিক তৈরি করে উন্নতমানের ফ্যাশনেবল গার্মেন্ট রপ্তানি করতে পারি। এজন্য বিশাল আকারের বিনিয়োগ এবং জ্বালানির নিশ্চয়তা ও সহজলভ্যতা প্রয়োজন। তৈরি পোশাকশিল্পের মূল্যহ্রাস পাওয়ায় এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি ও অধিকতর মূলস্ফীতির কারণে ইতোমধ্যে ৫শ ছোট-বড় কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতির চাকাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় টেক্সটাইল খাতে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বেকারত্ব দূর করতে হলে প্রাইমারি ও তৈরি পোশাকশিল্পকে সচল ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকার উৎপাদনমুখী শিল্পে যে কোনো পরিমাণ বিনিয়োগে প্রশ্ন ব্যতীত অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ দিয়েছিল। সে সময় তার সুফল পাওয়া গিয়েছিল। শিল্পে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ হয়েছিল।
এছাড়া কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত টাকা শিল্পে বিনিয়োগের ফলে টাকা পাচারকে অনুৎসাহিত করা গেছে। আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিতকরণ, ব্যাংক সুদের হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, ব্যাংকিং চার্জ কমানো, বন্দরের চার্জ হ্রাস, শ্রমিক অসন্তোষ, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে শিল্প উৎপাদনে গতিশীলতা আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।