ছাত্র এবং জনসাধারণের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভের সময় হাসিনা ভারতে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, যার ফলে ভারতে আশ্রয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রকৃত সম্পর্ক গড়ে তোলা তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি উভয় দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে জটিল গতিশীলতার সৃষ্টি করেছে। যদিও ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ড. ইউনূস এবং মোদির একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়েছিল, যা জনসাধারণের সম্পর্কের উন্নতির আশা জাগিয়ে তুলেছিল, তবুও অন্তর্নিহিত উত্তেজনা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
পূর্বে, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুরোধ পাঠিয়েছিল, কিন্তু ভারত কোনও সাড়া দেয়নি। পরিবর্তে, ভারত জনতার বিদ্রোহের মধ্যে পালিয়ে যাওয়া নেত্রীকে সমর্থন করছে বলে মনে হচ্ছে। বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে হাসিনার প্রত্যাবর্তনকে সহজতর না করা দুই দেশের সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যদি ভারত থেকে তিনি যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন তা সমাধান না করা হয়, তাহলে বাধাগুলি কেবল বাড়বে। তবে, তারা আরও উল্লেখ করেছেন যে ভারতের বর্তমান অবস্থান বিবেচনা করে তার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বেশ কম।
তদুপরি, বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অবদান ছিল মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার, আর বাকি ১৪ বিলিয়ন ডলার ভারত অবদান রেখেছে। বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় কর্মরত এবং ভারতীয় বিনিয়োগ বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। উপরন্তু, ভারতের পর্যটন খাত বাংলাদেশি দর্শনার্থীদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হয়।
ভারত বিশেষ করে শিলিগুড়ি করিডোর নিয়ে উদ্বিগ্ন, যা চিকেন নেক এলাকা নামেও পরিচিত, এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সাথে বিকল্প যোগাযোগ রুট বজায় রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের নিরাপত্তাও ভারতের জন্য একটি অগ্রাধিকার, যে কারণে তারা বাংলাদেশের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। বিপরীতে, বাংলাদেশের উচিত সম্পর্কের বর্তমান শীতলতা কমানোর জন্যও কাজ করা।